মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

রাজ্য | স্বামীর দোকানে টাকা দেন সুফিয়া বেগম

Pallabi Ghosh | ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১২ : ১৩Pallabi Ghosh


নীলাঞ্জনা সান্যাল: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা শুধু নিত্যকার সংসারের কাজে, সন্তানের পেছনেই খরচ করছেন না, প্রয়োজনে স্বামীদের ব্যবসার কাজেও এই টাকা দিচ্ছেন মেয়েরা। যে কোনও দরকারে এই টাকার সাহায্যে ‘‌ঢাল’‌ হয়ে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা।
নিতান্তই ছাপোষা বধূ সুফিয়া। সুফিয়া বেগম। ছেলেমেয়ে আর স্বামী নিয়ে তাঁর সুখের সংসার। স্বামী হাসিবুর রহমানের বাড়ির লাগোয়া জায়গাতেই ছোট্ট দোকান। গত তিন বছর ধরেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পান সুফিয়া। সেই টাকা দিয়ে নিজের টুকটাক কেনাকাটা করেন, ছেলেমেয়েদের কিছু কিনে দেন। জানালেন, দোকানের ‌‌জিনিসপত্র‌ কিনতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা অনেক সময় কাজে লেগেছে। তবে তাঁর এই টাকা হাসিবুর নিলেও আবার পরে ফেরত দিয়েছেন। সালুফা বেগমের স্বামী লেদ মেশিনের কাজ করেন। ছেলেকে ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করেছেন সালুফা। বাউরিয়া লোটাসে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা থেকে ছেলের টিউশনের খরচটা তিনিই দেন। নিজেই জানালেন, স্বামীর কাজ সবসময় এক রকম থাকে না। কাজ যখন কম থাকে, তখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা থেকে টাকা দেন তিনি। ৫০০ টাকা থেকে তাই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা বেড়ে হাজার হওয়ায় খুব খুশি সুফিয়া, সালুফা। এ টাকা তাঁদের একান্ত নিজস্ব। এর জন্য কারও কাছে হাত পেতে চাইতে হচ্ছে না। টাকার পরিমাণ বাড়ায় তাই আরও নানা কাজে খরচ করতে পারবেন বলে জানালেন দু’‌জনই।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়ে কেমন আছেন ‘‌লক্ষ্মী’‌রা, তা জানতেই চৈত্রের শেষ দুপুরে হাজির হয়েছিলাম হাওড়ার রঘুনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষালচক গ্রামে। গ্রামটি উলুবেড়িয়া লোকসভা আর পূর্ব উলুবেড়িয়া বিধানসভার অন্তর্গত। এলাকাটা সংখ্যালঘু–অধ্যুষিত। কথা হচ্ছিল হাওড়া জেলা গ্রামীণের তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি জুবের আলমের সঙ্গে। জুবের জানালেন, এই গ্রামের প্রায় অধিকাংশ মহিলাই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পান। কয়েক জনের ক্ষেত্রে কিছু ‘‌টেকনিক্যাল’‌ সমস্যা রয়েছে। যা মিটে যাবে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জমানো টাকা স্বামী শেখ সিরাজুল আলির চিকিৎসায় খরচ করেছেন বলে জানালেন সায়রা বেগম।
মেয়ে সাকিনা খাতুন বাসুদেবপুর স্কুলে ক্লাস ফাইভে পড়ে। প্রতি মাসে মেয়ের টিউশন খরচ–সহ খাতা, পেন, পেন্সিল খরচের টাকা এখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকেই দেন সায়রা। এছাড়াও পঞ্চায়েত থেকে মুরগি দিয়েছে, তা পালন করে কিছু রোজগার হয়। স্বামী বাইরে জরির কাজ করতেন। অসুস্থ হওয়ায় আপাতত বাড়িতে। সায়রা জানালেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে ৫ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন কিছু করবেন বলে। এই টাকাই স্বামীর চিকিৎসা করাতে খরচ হল। সংসারে তেমন অভাব নেই নাজিমা বেগমের। নিজেই জানালেন সে কথা। স্বামীর ছোটখাটো ব্যবসা রয়েছে। এক মেয়ে, দুই ছেলে নাজিমার। সংসারে যখন দিতে হয় না, তখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাটা কী করেন?‌ ‘‌নিজের মতো খরচ করি’ জানালেন নাজিমা। বললেন, ‘‌দুই বা তিন মাস অন্তর টাকা তুলি। কুটুমবাড়ি গেলে কিছু নিয়ে যাই, সেখানে গিয়ে খরচ করি। কাউকে কিছু দিতে ইচ্ছে হলে দিই।’ ল‌‌ক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিয়ে নিজের ওযুধ কেনেন বলে জানালেন অর্চনা মণ্ডল। তাজপুর যাওয়ার পথে দেখা পূর্ণিমা দত্ত, শোভা দত্তের সঙ্গে। মাঠে কাজ করছিলেন। পূর্ণিমা জানালেন, অনেক ওষুধ লাগে তাঁর। এখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পেয়ে খুব সুবিধে হয়েছে। এই টাকা দিয়ে নিজের ওষুধ কেনেন। ওষুধ, জামাকাপড় কেনার পাশাপাশি এই টাকা সংসার–খরচে লাগান শোভা। এবার এই টাকা বেড়ে এক হাজার হওয়ায় তাঁদের খুব উপকার হয়েছে বলে জানালেন দু’‌জনেই। সংসারের কাজ ছাড়াও নিজের হাতখরচ, নিজের পছন্দমতো কিছু কিনতে ইচ্ছে হলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা খরচ করেন বলে জানালেন হাজরা বিবি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা সংসার–খরচেই লেগে যায় বলে জানালেন রঞ্জনা পাল।
ফিরে আসার পথে গ্রামের চায়ের দোকানে একটু থামা। সেখানেই আলাপ হল হাসান আলি মোল্লা, আজান শেখ, কার্তিক পালদের সঙ্গে। আগে চাষের কাজ করতেন। বয়স হওয়ায় এখন আর কাজ সেভাবে করতে পারেন না। তাঁরা বার্ধক্য ভাতা পান। যা হোক কিছু করে সংসারের হাল ধরেছে ছেলেরা। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে প্রশ্ন করতেই হাসান আলি বললেন, ‘‌দিদিভাই, আপনার আর্থিক স্বাধীনতাটা বড়, আর আমাদের ঘরের মেয়েদের আর্থিক স্বাধীনতাটা ছোট— এই যা। মাস গেলে ঘরে বসে ঢুকছে টাকা। এখন আবার হাজার। একটু আরাম, পছন্দমতো বাঁচা, স্বপ্ন দেখা— সবই হচ্ছে এখন এই টাকায়। যে যার মতো করে খরচ করছে। কারও কাছে হাত পাততে হচ্ছে না। তাই জবাব চাওয়ারও কেউ নেই। বাড়ির মেয়ে–বউরা খুব খুশি। দিদিকে (‌‌মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি)‌‌ দু’‌হাত তুলে আশীর্বাদ করছে সবাই।’‌ ভোটের আঁচ এখনও লাগেনি দক্ষিণবঙ্গে। বাড়ি–বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন দলের কর্মীরা প্রচার শুরু করেছেন। রাজ্যের অনেক কেন্দ্রেই নির্ণায়ক ফ্যাক্টর হতে চলেছেন মেয়েরা। অনেক কেন্দ্রে মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি। কোথাও আবার পুরুষদের প্রায় সমান তাঁরা। গ্রাম ঘুরে মনে হল, স্বনির্ভরতার পরিসর বাড়িয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। এবারের ভোটে তাই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের গুরুত্ব অপরিসীম।




বিশেষ খবর

নানান খবর

শীঘ্রই আসছে...

নানান খবর

জাস্টিস ফর আরজি কর কর্মসূচিতে তরুণীর সঙ্গে আলাপ ও বন্ধুত্ব, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ‘‌প্রতিবাদী’‌...

শ্রমিকদের হাতে খুন সুপারভাইজার, উত্তেজনা জুপিটার কারখানায়...

নারী নিরাপত্তাই মূল উদ্দেশ্য, মহিলা টহল ভ্যান চালু করল কোচবিহার জেলা পুলিশ...

৩০০ বছর ধরে এই জমিদার বাড়িতে চলছে দুর্গাপুজো, মা দুর্গার সঙ্গে পূজিত হচ্ছেন রাম-সীতাও...

বজ্রপাতে নষ্ট ট্রলারের ওয়্যারলেস, নিখোঁজ ৪৯ জন মৎস্যজীবী-সহ তিনটি ট্রলার...

ধূপগুড়িতে দেশী বাজনার প্রতিযোগিতা, তুলে ধরা হল রাজবংশী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি...

রবিবারেও ভাসছে বাংলা, সোমবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি দক্ষিণবঙ্গে...

মাকে বাঁচিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিশোর ছেলের মৃত্যু ...

বিজেপির বড়সড় ভাঙন মথুরাপুরে! শতাধিক কর্মী যোগ দিলেন তৃণমূলে...

উর্বরতার উৎসবে সাতদিনের ব্রত, ডায়না-জলঢাকায় বিসর্জন করম পূজার...

ডাইনি সন্দেহে দুই আদিবাসী মহিলাকে পিটিয়ে খুন, হাড়হিম ঘটনা বীরভূমে...

শুরু হল আজকাল প্রোপার্টি ফেয়ার, প্রথম দিনেই অপ্রত্যাশিত সাড়া...

আজ থেকে হাওড়া-তারকেশ্বর এবং আরামবাগ শাখায় বন্ধ থাকছে ৮টি লোকাল ট্রেন ...

জনসাধারণকে উৎসবে, জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহ্বান তৃণমূল সাংসদ রচনার ...

জেলা লোকশিল্পী সম্মেলন হল হুগলিতে



সোশ্যাল মিডিয়া



04 24